MINHAJ UL QURAN INTERNATIONAL - BANGLADESH

মিনহাজ উল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল - বাংলাদেশ

“আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা সায়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিন ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাহবিহি ওয়া বারিক ওয়া সাল্লিম”
(اَللَّهُمَّ صَلِّي عَليَ سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَعَليَ أَلِهِ وَصَحْبِهِ وَبَارِكْ وَسَلِّمْ)

মিনহাজ-উল-কুরআন ইন্টারন্যাশনাল-বাংলাদেশ সংগঠনটি মিনহাজ-উল-কুরআন ইন্টারন্যাশনাল যুক্তরাজ্যের একটি শাখা। মিনহাজ-উল-কুরআন ইন্টারন্যাশনাল একটি সার্বজনীন অ-রাজনৈতিক, অ-সাম্প্রদায়িক আন্তর্জাতিক বেসরকারী সংস্থা। বিশ্বব্যাপী চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় শান্তিময় ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শসমূহের প্রচার, আন্তঃধর্মীয় সংহতি ও সম্প্রীতি, সহনশীলতা ও আধুনিক শিক্ষার উন্নয়ন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন, এবং আর্থ- সামাজিক কল্যাণের লক্ষ্যে বিশ্বের প্রায় শতাধিক দেশে এর কার্যক্রম সম্প্রসারিত করেছে। বিশুদ্ধ ইসলামী শিক্ষা ও দর্শনের প্রচার, এবং মুসলিম উম্মাহর নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নে সৃষ্টিকুল শিরোমণি সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব নুরে মুজাস্‌সাম মহানবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা(সঃ) এর আদর্শগত শান্তিময় দীন ইসলামের প্রচার, এবং বিশ্বব্যাপী সংকীর্ণ মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গিসহ বিবাদমান ধর্মীয় অপ-প্রচারের বিরুদ্ধে মিনহাজ-উল-কুরআন ইন্টারন্যাশনাল সুশৃঙ্খল জ্ঞান নির্ভর প্রচারণার কারণে জাতিসংঘ কর্তৃক বিশ্ব শান্তির দূত হিসাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। বর্তমান শতাব্দীর মুজাদ্দিদ (Reviver of the current Century) শায়খুল ইসলাম ডঃ মুহাম্মাদ তাহির-উল-কাদরি ১৯৮০ সালের ১৭ ই অক্টোবর মিনহাজ-উল-কুরআন নামের রূহানী সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এটি এত দ্রুত প্রচার ও প্রসার পেয়েছে যে মাত্র ৩০ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এর সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক বিশ্বের প্রায় ১০০ টি দেশে প্রসারিত হয়েছে।

মিনহাজ-উল-কুরআন ইন্টারন্যাশনালের প্রাথমিক উদ্দেশ্য দীন ইসলামের আলোকে সমাজে একটি ব্যাপক ও বহুমাত্রিক শান্তিময় পরিবর্তন আনয়ন করা, ইসলামের নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ জাগ্রত করা এবং মুসলিম উম্মাহকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পবিত্র নবী (আঃ)এর শেখানো আল কুরআনউল কারিমের ও তাজদারে কায়েনাত আকা এ দুজাহান আহমাদে মুজতবা (সঃ), মুহাম্মাদে মুস্তফা (সঃ) এর নুরময় সুন্নাহ এর আলোকে শান্তিপূর্ণ সমাজে জীবন যাপন করা এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। মিনহাজ-উল-কুরআন মুসলিম উম্মাহর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক, মতাদর্শিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিশেষ করে ইসলামের প্রকৃত মূল্যবোধ ও নীতিমালা পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। প্রেম, শান্তি, সাম্য, সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়বিচার, এবং সমৃদ্ধি এই মূল্যবোধগুলির পুনরুজ্জীবনের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে মিনহাজ-উল-কুরআন বিশ্বব্যাপী এর কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।উগ্রবাদের আর্তনাদে বিক্ষুদ্ধ বর্তমান বিশ্বে ধর্মীয় অপ-ব্যাখ্যার নিরসন কল্পে মিনহাজ-উল-কুরআন ইন্টারন্যাশনাল এর বাংলাদেশ শাখা শতাব্দীর মুজাদ্দীদ জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত বিশ্ব শান্তির দুত শায়খুল ইসলাম ডঃ মুহাম্মাদ তাহির-উল- কাদরির নেতৃত্বে স্ফটিক স্বচ্ছ শান্তির বারতা সুফীজম এর আলোকে প্রচার করে চলেছে।

মিনহাজিয়ানদের জন্যে আমল:

আত্মিক ও জাগতিক সংশোধনের জন্য ‘মিনহাজ-উল আমল:

لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا
শায়খুল ইসলাম ড. মুহাম্মদ তাহেরুল কাদেরীর পক্ষ থেকে তাঁর আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের চারিত্রিক ও আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণের জন্য—–

মিনহাজুল আমল:
‘তাহরীকে মিনহাজুল কুরআন’ ‘তাহরীকে মিনহাজুল কুরআন’ বর্তমান যুগের মুসলিম উম্মাহর অবস্থার সংশোধন ও উৎকর্ষ সাধনের জন্য সবচেয়ে বড় আন্দোলন। সারা বিশ্বে এ আন্দোলনের পরিচিতি তার সদস্যবর্গ ও কর্তা ব্যক্তিদের হয়ে থাকে। তাই আমাদের কাজ-কর্ম অন্যান্যদের জন্য দৃষ্টান্ত হওয়া চাই। আমাদের কাজ-কর্মকে ‘উসওয়া-ই মুহাম্মাদী’র আলোকে ঢেলে সাজানোর জন্য হুযূর শায়খুল ইসলাম ‘মিনহাজুল আমল’ আমাদেরকে প্রদান করেছেন। এ ‘মিনহাজুল আমল’কে ইবাদত, মু‘আমিলাত ও তাহুরীকী প্রয়োজনীতা- এ তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে।

ইবাদত:

যথাসম্ভব সর্বদা ওযু সহকারে থাকুন। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হোন।
➤ প্রতিদিন (কমপক্ষে) ১০০ বার দরূদ শরীফ
اَللَّهُمَّ صَلِّي عَليَ سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَعَليَ أَلِهِ وَصَحْبِهِ وَبَارِكْ وَسَلِّمْ
(আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা সায়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিন ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাহবিহি ওয়া বারিক ওয়া সাল্লিম)।

১০০ বার ইসতিগফার
أَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيْمَ الَّذِيْ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
(আস্তাগ ফিরুল্লাহাল লাযী লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম ওয়াতুবু ইলাইহি) এবং ১০০ বার لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) দ্বারা যিকির শেষ করুন।

প্রতিদিন মাগরিবের নামাযের পর দু’রাকাত নফল নামায আকা মাওলা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে আদায় করুন।

➤ প্রতি আরবি মাসের প্রথম সোমবার রোযা রাখুন।
➤ মাসে একবার সারা রাত জেগে ইবাদত করুন এবং ‘ইরফানুল কুরআন’ এর দরসে অবশ্যই অংশগ্রহণ করুন।
➤ নামাযের জন্য শেষ দশ সূরা তরজমাসহ মুখস্ত করুন।
➤ তাহাজ্জুদ নামায আদায়ের চেষ্টা করুন।
➤ ‘ইরফানুল কুরআন’ থেকে প্রতিদিন এক রুকু তরজুমাসহ তিলাওয়াত করুন এবং মিনহাজুস সভী থেকে প্রতিদিন একটি হাদিস শরীফ অধ্যায়ন করুন।
➤ বছরে ১০ দিনের জন্য ‘গুশায়ে দরূদ’ (দরূদ কর্ণারে) দরূদ পড়ার জন্য একাকীত্বতা অবলম্বন করুন এবং কেন্দ্রে বাৎসরিক সুন্নাতে ই‘তিকাফে ই‘তিকাফ আদায় করুন।

মু‘আমিলাত:

➤ আমানত, প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং সত্য বলাকে নিজের নিদর্শন করে নিন।
➤ মানবতার সম্মান এবং প্রত্যেক লোকের সাথে নম্রতা ও ভদ্রতার সাথে মিলিত হওয়াকে নিজের আচরণের অংশ করে নিন।
➤ ভদ্রজন, নিকতাত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের সাথে সুন্দর আচরণ করুন।
➤ আত্মীয়, প্রতিবেশী এবং এ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্তজনদের ইন্তিকালে শোক প্রকাশ, সেবা-যত্ন, সুখে-দুঃখে তাদের অবস্থা জিজ্ঞাসা এবং সাক্ষাতের জন্য একটি সময় নির্দিষ্ট করুন।
➤ মাসে কমপক্ষে একবার কোন ইয়াতিম ও মিসকীনকে ঘরে নিয়ে নিজের সাথে আহার করান।
➤ সুখে-দুঃখে শরীয়ত বিরোধী রসম-রেওয়াজ এবং অন্যান্য অপব্যয় থেকে বিরত থাকুন।
➤ আচার-আচরণ ও বেশভূষণে সহজতা ও সারল্যকে গ্রহণ করুন।
➤ পরিবার-পরিজনের জন্য দ্বীনি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের প্রতি বিশেষ নজর দিন।
➤ মসজিদের সেবা করাকে নিজের অভ্যাসে পরিণত করুন।

তাহরীকী প্রয়োজন:

➤ মাসিক আর্থিক সহযোগীতা নিয়মিত পরিশোধ করুন।
➤ নিজের সক্ষমতা অনুযায়ী ত্যাগের মানসিকতার পরিচয় দিন এবং মাসিক আয় থেকে কমপক্ষে শতকরা একাংশ ‘তাহরীকে মিনহাজুল কুরআন’র জন্য ব্যয় করুন।
➤ ক্যাসেটের মাধ্যমে দাওয়াত দেওয়ার নীতি গ্রহণ করুন এবং প্রতি মাসে একজন নতুন বন্ধু গ্রহণ করুন।
➤ প্রতি মাসে মাসিক মিনহাজুল কুরআন/ আল-উলামা/ দুখতারানে ইসলাম ইত্যাদি পত্রিকা গভীর মনোযোগে পাঠ করুন।

সকল কর্ম-কর্তাদের জন্য মিনহাজুল আমল:

উপরিউল্লিখ ‘মিনহাজুল কুরআন’র সাথে সাথে সকল কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দের জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলো পালন করাও আবশ্যক।
➤ আইয়্যামে বীয (চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ)-এর রোযা রাখুন।
➤ নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাতের সাথে আদায় করুন।
➤ তাহাজ্জুদের নামায নিয়মিত আদায় করুন। সাথে সাথে ইশরাক ও আওয়াবিনের নামাযও আদায় করার চেষ্টা করুন।
➤ কুরআন শরীফের শেষ দশ সূরা অনুবাদসহ এবং কুরআনে বর্ণিত মাসনুন দোয়াসমূহ মুখস্ত করুন।
➤ প্রতি ১৫ দিন অন্তর একজন ইয়াতিম-মিসকীনকে নিজের সাথে ঘরে নিয়ে গিয়ে আহার করান।
➤ সংগঠনের পদবী অনুযায়ী মাসিক সাংগঠনিক সভায় নিয়মিত উপস্থিত হোন এবং সাংগঠনিক নিয়ম-নীতি ও শৃঙ্খলা অনুসরণ করুন।
➤ সংগঠনের উদ্বর্ধতন কর্তৃপক্ষ থেকে জারিকৃত সাংগঠনিক বিধি-বিধান মেনে চলুন এবং অন্যকে মেনে চলতে বলুন ।