আত্মিক ও জাগতিক সংশোধনের জন্য ‘মিনহাজ-উল আমল:

لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنْكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا
শায়খুল ইসলাম ড. মুহাম্মদ তাহেরুল কাদেরীর পক্ষ থেকে তাঁর আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের চারিত্রিক ও আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণের জন্য—–

মিনহাজুল আমল:

‘তাহরীকে মিনহাজুল কুরআন’ ‘তাহরীকে মিনহাজুল কুরআন’ বর্তমান যুগের মুসলিম উম্মাহর অবস্থার সংশোধন ও উৎকর্ষ সাধনের জন্য সবচেয়ে বড় আন্দোলন। সারা বিশ্বে এ আন্দোলনের পরিচিতি তার সদস্যবর্গ ও কর্তা ব্যক্তিদের হয়ে থাকে। তাই আমাদের কাজ-কর্ম অন্যান্যদের জন্য দৃষ্টান্ত হওয়া চাই। আমাদের কাজ-কর্মকে ‘উসওয়া-ই মুহাম্মাদী’র আলোকে ঢেলে সাজানোর জন্য হুযূর শায়খুল ইসলাম ‘মিনহাজুল আমল’ আমাদেরকে প্রদান করেছেন। এ ‘মিনহাজুল আমল’কে ইবাদত, মু‘আমিলাত ও তাহুরীকী প্রয়োজনীতা- এ তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে।

ইবাদত:

যথাসম্ভব সর্বদা ওযু সহকারে থাকুন। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হোন।
➤ প্রতিদিন (কমপক্ষে) ১০০ বার দরূদ শরীফ
اَللَّهُمَّ صَلِّي عَليَ سَيِّدِنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَعَليَ أَلِهِ وَصَحْبِهِ وَبَارِكْ وَسَلِّمْ
(আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা সায়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিন ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাহবিহি ওয়া বারিক ওয়া সাল্লিম)।

১০০ বার ইসতিগফার
أَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيْمَ الَّذِيْ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
(আস্তাগ ফিরুল্লাহাল লাযী লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম ওয়াতুবু ইলাইহি) এবং ১০০ বার لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) দ্বারা যিকির শেষ করুন।

প্রতিদিন মাগরিবের নামাযের পর দু’রাকাত নফল নামায আকা মাওলা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে আদায় করুন।

➤ প্রতি আরবি মাসের প্রথম সোমবার রোযা রাখুন।
➤ মাসে একবার সারা রাত জেগে ইবাদত করুন এবং ‘ইরফানুল কুরআন’ এর দরসে অবশ্যই অংশগ্রহণ করুন।
➤ নামাযের জন্য শেষ দশ সূরা তরজমাসহ মুখস্ত করুন।
➤ তাহাজ্জুদ নামায আদায়ের চেষ্টা করুন।
➤ ‘ইরফানুল কুরআন’ থেকে প্রতিদিন এক রুকু তরজুমাসহ তিলাওয়াত করুন এবং মিনহাজুস সভী থেকে প্রতিদিন একটি হাদিস শরীফ অধ্যায়ন করুন।
➤ বছরে ১০ দিনের জন্য ‘গুশায়ে দরূদ’ (দরূদ কর্ণারে) দরূদ পড়ার জন্য একাকীত্বতা অবলম্বন করুন এবং কেন্দ্রে বাৎসরিক সুন্নাতে ই‘তিকাফে ই‘তিকাফ আদায় করুন।

মু‘আমিলাত:

➤ আমানত, প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং সত্য বলাকে নিজের নিদর্শন করে নিন।
➤ মানবতার সম্মান এবং প্রত্যেক লোকের সাথে নম্রতা ও ভদ্রতার সাথে মিলিত হওয়াকে নিজের আচরণের অংশ করে নিন।
➤ ভদ্রজন, নিকতাত্মীয় এবং প্রতিবেশীদের সাথে সুন্দর আচরণ করুন।
➤ আত্মীয়, প্রতিবেশী এবং এ আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্তজনদের ইন্তিকালে শোক প্রকাশ, সেবা-যত্ন, সুখে-দুঃখে তাদের অবস্থা জিজ্ঞাসা এবং সাক্ষাতের জন্য একটি সময় নির্দিষ্ট করুন।
➤ মাসে কমপক্ষে একবার কোন ইয়াতিম ও মিসকীনকে ঘরে নিয়ে নিজের সাথে আহার করান।
➤ সুখে-দুঃখে শরীয়ত বিরোধী রসম-রেওয়াজ এবং অন্যান্য অপব্যয় থেকে বিরত থাকুন।
➤ আচার-আচরণ ও বেশভূষণে সহজতা ও সারল্যকে গ্রহণ করুন।
➤ পরিবার-পরিজনের জন্য দ্বীনি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের প্রতি বিশেষ নজর দিন।
➤ মসজিদের সেবা করাকে নিজের অভ্যাসে পরিণত করুন।

তাহরীকী প্রয়োজন:

➤ মাসিক আর্থিক সহযোগীতা নিয়মিত পরিশোধ করুন।
➤ নিজের সক্ষমতা অনুযায়ী ত্যাগের মানসিকতার পরিচয় দিন এবং মাসিক আয় থেকে কমপক্ষে শতকরা একাংশ ‘তাহরীকে মিনহাজুল কুরআন’র জন্য ব্যয় করুন।
➤ ক্যাসেটের মাধ্যমে দাওয়াত দেওয়ার নীতি গ্রহণ করুন এবং প্রতি মাসে একজন নতুন বন্ধু গ্রহণ করুন।
➤ প্রতি মাসে মাসিক মিনহাজুল কুরআন/ আল-উলামা/ দুখতারানে ইসলাম ইত্যাদি পত্রিকা গভীর মনোযোগে পাঠ করুন।

সকল কর্ম-কর্তাদের জন্য মিনহাজুল আমল:

উপরিউল্লিখ ‘মিনহাজুল কুরআন’র সাথে সাথে সকল কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দের জন্য নিম্নোক্ত বিষয়গুলো পালন করাও আবশ্যক।
➤ আইয়্যামে বীয (চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ)-এর রোযা রাখুন।
➤ নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাতের সাথে আদায় করুন।
➤ তাহাজ্জুদের নামায নিয়মিত আদায় করুন। সাথে সাথে ইশরাক ও আওয়াবিনের নামাযও আদায় করার চেষ্টা করুন।
➤ কুরআন শরীফের শেষ দশ সূরা অনুবাদসহ এবং কুরআনে বর্ণিত মাসনুন দোয়াসমূহ মুখস্ত করুন।
➤ প্রতি ১৫ দিন অন্তর একজন ইয়াতিম-মিসকীনকে নিজের সাথে ঘরে নিয়ে গিয়ে আহার করান।
➤ সংগঠনের পদবী অনুযায়ী মাসিক সাংগঠনিক সভায় নিয়মিত উপস্থিত হোন এবং সাংগঠনিক নিয়ম-নীতি ও শৃঙ্খলা অনুসরণ করুন।
➤ সংগঠনের উদ্বর্ধতন কর্তৃপক্ষ থেকে জারিকৃত সাংগঠনিক বিধি-বিধান মেনে চলুন এবং অন্যকে মেনে চলতে বলুন ।